আগেকার দিনগুলো ছিল অনেক সহজ, অনেক খাঁটি। সকালবেলা গ্রামের মাঠে ছুটোছুটি, দুপুরে কাকডাকা বিরাম, আর বিকেলের নরম রোদ—এই সবকিছুর মাঝখানে এক অবিচ্ছেদ্য সঙ্গী ছিল দেশি সরিষার খাঁটি তেল।
গ্রামের বাড়িতে মা, চাচি আর দাদি—তিনজনেই নিজের মতো করে সরিষার তেলের গল্প করতেন। মা বলতেন, “তেলটা কেমন, সেটা শুধু গন্ধ দেখেই বোঝা যায়। খাঁটি তেল হলে রান্নাঘর ভরে যায় সুবাসে।” দাদির রান্নাঘরে ঢুকলেই নাকে আসত কাঁচা সরিষার এক তীব্র অথচ নরম গন্ধ। সেই ঘ্রাণের সাথে মিশে থাকত গরম ভাত, শুঁটকি ভর্তা আর বেগুন ভাজির স্মৃতি।
শুধু রান্না নয়, তেলের আরেকটি বড় ভূমিকা ছিল আমাদের শরীরচর্চায়। শীত পড়া মানেই সকালে উঠেই মা হাতে এক ছোট বাটি গরম তেল নিয়ে ডাকতেন—“এসো, তেল মালিশ করি।” পায়ের পাতায়, হাঁটুতে, কাঁধে আর মাথায় সযত্নে লাগাতেন তিনি। আমরা ছোটরা একটু বিরক্ত হতাম, কিন্তু মা হাসিমুখে বলতেন, “এটাই শরীর গরম রাখবে, হাড় শক্ত করবে।” এখন বুঝি, সেই তেল শুধু শরীরের যত্ন ছিল না, ছিল ভালোবাসার ছোঁয়া।
গ্রামের সরিষার খেতে হলুদ ফুল ফুটত শীতে। মাঠের এপাশ-ওপাশ জুড়ে সরিষার ঝাঁক। সেই সরিষার বীজ থেকেই তৈরি হত আমাদের পরিচিত খাঁটি তেল। বাবা বলতেন, “এই তেলেই আছে প্রকৃতির আসল শক্তি—না আছে অতিরিক্ত প্রসেসিং, না আছে কোনো রং বা স্বাদ বাড়ানোর উপাদান।” রান্নায় সেই তেল পড়লেই স্বাদে এক অনন্য তফাৎ টের পাওয়া যেত। পান্তা ভাত, খিচুড়ি, আলু ভর্তা—সবখানেই এই সরিষার তেলের স্পর্শ মানেই ছিল অন্যরকম সুখ।
আজকের বাজারে যেসব তেল পাওয়া যায়, সেগুলোর স্বাদ-গন্ধ আর সেই পুরনো দিনের তেলের সাথে তুলনা চলে না। ঠিক এই কারণেই Raw Satkhita আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছে দেশি সরিষার খাঁটি তেল—একেবারে সেই পুরনো দিনের স্বাদের মতোই খাঁটি, নিখাদ এবং প্রাকৃতিক।
সাতক্ষীরার স্থানীয় কৃষকেরা যত্ন নিয়ে উৎপাদন করা সরিষা থেকে তৈরি এই তেলটিতে নেই কোনো অতিরিক্ত কেমিক্যাল, নেই কৃত্রিম প্রসেসিং। তাই এর স্বাদ, গন্ধ আর পুষ্টিগুণ ঠিক তেমনই থেকে যায়—যেমনটা আমরা ছোটবেলায় পেতাম। প্রতিবার রান্নায় কিংবা ত্বকের যত্নে এই তেল ব্যবহার করলেই মনে হবে—শুধু স্বাদ নয়, গ্রামবাংলার মাটির ঘ্রাণও যেন ফিরে এল আপনার ঘরে।
এটা শুধু তেল নয়,
এটা স্মৃতি—
এটা সুস্থতার গল্প—
এটা প্রকৃতির সরলতা।